• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

ক্ষেপেছিল হাতি পিষে মারল মাহুতের ছেলেকে

  • ''
  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় হাতির আক্রমণে এক মাহুতের (রক্ষক ও পরিচর্যাকারী) ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় কাজ করছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক রফিকুল ইসলাম তালুকদার।

ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদের দিন (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহিদ (১৭) মাহুত আজাদ আলীর ছেলে। মাহুত আজাদ আলী দীর্ঘদিন ধরে চিড়িয়াখানায় চাকরি করছেন। এদিন তিনি তার ছেলেকে নিয়ে হাতির এক্সারসাইজ গ্রাউন্ডে ঢুকে যান। হাতি ছেলেটাকে না চেনায় আক্রমণ করে। আমাদের না জানিয়ে আহত অবস্থায় ছেলেকে নিয়ে তার বাবা হবিগঞ্জের কুলাউড়ায় রওনা হন, পথে ছেলেটির মৃত্যু হয়।

চিড়িয়াখানায় সূত্র জানায়, মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানার মাহুত আজাদ আলীর একমাত্র ছেলে ছিল জাহিদ। ঈদের নামাজ আদায় শেষে পিতা-পুত্র একসঙ্গে ভাত খান। পরে ছেলেকে নিজেই চিড়িয়াখানার হাতির খাঁচায় ডেকে নিয়ে যান আজাদ আলী। সেখানে হাতি এবং মাহুতের ছেলে একটি বলনিয়ে খেলা করছিল। একদিকে অচেনা অন্যদিকে বল দিতে দেরি হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দীর্ঘদিনের পোষ মানা এই হাতিটি। জাহিদকে আক্রমণ করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় জাহিদ। ২০১৯ সাল থেকে জাতীয় চিড়িয়াখানায় মাস্টাররোলে (দৈনিক হাজিরাভিত্তিক) মাহুত হিসেবে কর্মরত আজাদ আলী। চাকরি সূত্রে আজাদ ও তার স্ত্রী ঢাকায় থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়। জাহিদ সেখানেই থাকত। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে সে ঢাকায় এসেছিল। আজাদ আলী বংশপরম্পরায় মাহুত হিসেবে কাজ করে আসছেন। কুলাউড়ায় জাহিদও মাহুত হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল।

আজাদ আলী বলেন, হাতি বল দিয়া মারামারি (খেলা) করতাছে। আমার এক ভাই হাতির ওপরে ছিল। তারে (ছেলেকে) থুইয়া আমি পানি আনার লেইগা (হাতির) ভেতরে ঢুকছি। হাতিটা (ছেলেকে) পারা দিয়া লগে লগে মাইরা ফেলাইছে। এক মিনিটও সময় দেয় নাই।

মিরপুর চিড়িয়াখানায় পাঁচটি হাতি আছে। এগুলো এশিয়ান হাতি। যখন দুর্ঘটনা ঘটে, তখন হাতির শারীরিক চর্চা করানো হচ্ছিল। রাজা নামের হাতিটি তখন ছাড়া ছিল। ঘটনার পর আরেক মাহুত হাতিটিকে শিকল দিয়ে বাঁধে বলে জানা গেছে।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের উপদেষ্টা এবং জাতীয় চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ডা. এবিএম শহিদুল্লাহ বলেন, দুই-একদিনের মধ্যে আমরা চিড়িয়াখানার হাতিটির শারীরিক ও মানষিক পরীক্ষা করতে যাব। কোনো অসঙ্গতি পেলে হাতিটিকে সিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হবে।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার বিরবণ থেকে জানা গেছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই মাহুত তার ছেলেকে হাতির ঘরে নিয়েছিল। এখানো কর্র্তৃপক্ষের কোনো গাফলিতি নেই। এটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, ছেলেটি হাতির সঙ্গে বল খেলা অবস্থায় হাতিটি অন্যদিকে বল মেরেছিল। জাহিদ একারণে হাতির কাছে পুনরায় বল দিচ্ছিল না। এ করণেই ঘটে দুর্ঘটনা। মাহুতের অসচেতনতার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। সে হাতির পরিচিত, তার ছেলে পরিচিত না। বিষয়টি যদি বুঝতে পারত, তাহলে হয়তো এ দুর্ঘটনা হয়তো এড়ানো যেত।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের জুনে চিড়িয়াখানায় হায়নার কামড়ে একটি শিশুর হাত থেকে কবজি বিচ্ছিন্ন হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads